নামকরণ
[warning]এ সূরাটির দু’টি নাম; সূরা ‘নূন’ এবং সূরা ‘আল কলম’। দু’টি শব্দই সূরার শুরুতে আছে।[/warning]
নাযিল হওয়ার সময়-কাল
এটিও মক্কী জীবনের প্রথম দিকে নাযিল হওয়া সূরা সমূহের অন্যতম। তবে এর বিষয়বস্তু থেকে স্পষ্ট হয় যে, এ সূরাটি যে সময় নাযিল হয়েছিলো তখন মক্কা নগরীতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরোধিতা বেশ তীব্র হয়ে উঠেছিলো।
বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য
এতে তিনটি মূল বিষয় আলোচিত হয়েছে। বিরোধীদের আপত্তি ও সমালোচনার জবাব দান, তাদেরকে সতর্কীকরণ ও উপদেশ দান এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ধৈর্যধারণ ও অবিচল থাকার উপদেশ দান।
বক্তব্যের শুরুতেই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলা হয়েছে , এসব কাফের তোমাকে পাগল বলে অভিহিত করছে। অথচ তুমি যে কিতাব তাদের সামনে পেশ করছো এবং নৈতিকতার যে উচ্চ আসনে তুমি অধিষ্ঠিত আছো তা-ই তাদের এ মিথ্যার মুখোশ উন্মোচনের জন্য যথেষ্ট। শিগগিরই এমন সময় আসবে যখন সবাই দেখতে পাবে , কে পাগল আর কে বুদ্ধিমান। অতএব তোমার বিরুদ্ধে বিরোধিতার যে তাণ্ডব সৃষ্টি করা হচ্ছে তা দ্বারা কখনো প্রভাবিত হয়ো না। আসলে তুমি যাতে কোন না কোনভাবে প্রভাবিত হয়ে তাদের সাথে সমঝোতা (Compromise) করতে রাজী হয়ে যাও, এ উদ্দেশ্যই এ কাজ করা হচ্ছে।
অতপর সাধারণ মানুষকে চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার জন্য বিরুদ্ধবাদীদের মধ্য থেকে একজন গন্যমান্য ব্যক্তির কার্যকলাপ তুলে ধরা হয়েছে। এ ব্যক্তিকে মক্কাবাসীরা খুব ভাল করে জানতো। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূত-পবিত্র নৈতিক চরিত্রও তাদের সবার কাছে ষ্পষ্ট ছিলো। মক্কার যেসব নেতা তাঁর বিরোধিতায় সবার অগ্রগামী তাদের মধ্যে কোন ধরনের চরিত্র সম্পন্ন লোক শামিল রয়েছে তা যে কেউ দেখতে পারতো।
এরপর ১৭ থেকে ৩৩ আয়াত পর্যন্ত একটি বাগানের মালিকদের উদাহরণ পেশ করা হয়েছে। আল্লাহর নিয়ামত লাভ করেও তারা সে জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেনি। বরং তাদের মধ্যকার সর্বোত্তম ব্যক্তিটির কথাও তারা যথাসময়ে মেনে নিয়নি। অবশেষে তারা সে নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হয়েছে। যখন তাদের সবকিছুই ধ্বংস ও বরবাদ হয়ে গিয়েছে তখনই কেবল তাদের চেতনা ফিরেছে। এ উদাহরণ দ্বারা মক্কীবাসীকে এভাবে সাবধান করা হয়েছে যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রসূল করে পাঠানোর কারণে তোমরাও ঐ বাগান মালিকদের মতো পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছো। তোমরা যদি তাকে না মানো তাহলে দুনিয়াতেও শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। আর এ জন্য আখেরাতে যে শাস্তি ভোগ করবে তাতো এর চেয়েও বেশী কঠোর।
এরপর ২৪ থেকে ৪৭ আয়াত পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে কাফেরদেরকে বুঝানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কখনো সরাসরি তাদেরকে লক্ষ করে বক্তব্য পেশ করা হয়েছে। আবার কখনো রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে বক্তব্য পেশ করা হয়েছে। আসলে সাবধান করা হয়েছে তাদেরকেই। এ সম্পর্কে যেসব কথা বলা হয়েছে তার সার সংক্ষেপ হলো, আখেরাতের কল্যাণ তারাই লাভ করবে যারা আল্লাহভীতির ওপর ভিত্তি করে দুনিয়াবী জীবন যাপন করেছে। আল্লাহর বিচারে গোনাহগার ও অপরাধীদের যে পরিণাম হওয়া উচিত আল্লাহর অনুগত বান্দারাও সে একই পরিণাম লাভ করবে এরূপ ধ্যান-ধারণা একেবারেই বুদ্ধি-বিবেক বিরোধী। কাফেরদের এ ভ্রান্ত ধারণা একেবারই ভিত্তিহীন যে, তারা নিজের সম্পর্কে যা ভেবে বসে আছে আল্লাহ তা’আলা তাদের সাথে অনুরূপ আচরণেই করবেন। যদিও এ বিষয়ে তাদের কাছে কোন নিশ্চয়তা বা গ্যারান্টি নেই ।আজ এ পৃথিবীতে যাদেরকে আল্লাহর সামনে মাথা নত করার আহবান জানানো হচ্ছে তারা তা করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। কিন্তু কিয়ামতের দিন তারা সিজদা করতে চাইলেও করতে সক্ষম হবে না। সেদিন তাদেরকে লাঞ্ছনাকর পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে। কুরআনকে অস্বীকার করে তারা আল্লাহর আযাব থেকে নিষ্কৃতি পেতে পারে না। তাদেরকে যে অবকাশ দেয়া হচ্ছে তাতে তারা ধোঁকায় পড়ে গেছে। তারা মনে করছে এভাবে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা ও অস্বীকৃতি সত্ত্বেও যখন তাদের ওপর আযাব আসছে না তখন তারা সঠিক পথেই আছে। অথচ নিজের অজান্তেই তারা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের কাছে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরোধিতা করার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই।কারণ তিনি দীনের একজন নিঃস্বার্থ প্রচারক। নিজের জন্য তিনি তাদের কাছে কিছুই চান না। তারা দাবী করে একথাও বলতে পারছে না যে, তিনি রসূল নন অথবা তাদের কাছে তাঁর বক্তব্য মিথ্যা হওয়ার প্রমাণ আছে।
[important]সবশেষে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলা হয়েছে যে, চূড়ান্ত ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত দীনের প্রচার ও প্রসারের পথে যে দুঃখ-কষ্টই আসুক না কেন, ধৈর্যের সাথে তা বরদাশত করতে থাকুন এবং এমন অধৈর্য হয়ে পড়বেন না যা ইউনুস আলাইহি সালামের জন্য কঠিন পরীক্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো।[/important]
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ ن ۚ وَالْقَلَمِ وَمَا يَسْطُرُونَ﴾
১) নূন, শপথ কলমের এবং লেখকরা যা লিখে চলেছে তার ৷
﴿مَا أَنتَ بِنِعْمَةِ رَبِّكَ بِمَجْنُونٍ﴾
২) তোমার রবের অনুগ্রহে তুমি পাগল নও৷
﴿وَإِنَّ لَكَ لَأَجْرًا غَيْرَ مَمْنُونٍ﴾
৩) আর নিশ্চিতভাবেই তোমার জন্য এমন পুরস্কার রয়েছে যা কখনো ফুরাবে না ৷
﴿وَإِنَّكَ لَعَلَىٰ خُلُقٍ عَظِيمٍ﴾
৪) নিসন্দেহে তুমি নৈতিকতার অতি উচ্চ মর্যাদার সমাসীন ৷
﴿فَسَتُبْصِرُ وَيُبْصِرُونَ﴾
৫) অচিরে তুমিও দেখতে পাবে এবং তারাও দেখতে পাবে যে,
﴿بِأَييِّكُمُ الْمَفْتُونُ﴾
৬) তোমাদের উভয়ের মধ্যে কারা পাগলামীতে লিপ্ত৷
﴿إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ﴾
৭) তোমার রব তাদেরকে ও ভাল করে জানেন যারা তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে৷ আর তাদেরকেও ভাল করে জানেন যারা সঠিক পথ প্রাপ্ত হয়েছে৷
﴿فَلَا تُطِعِ الْمُكَذِّبِينَ﴾
৮) কাজেই তুমি মিথ্যাচরীদের অনুসরণ করো না৷
﴿وَدُّوا لَوْ تُدْهِنُ فَيُدْهِنُونَ﴾
৯) তারা তো চায় তুমি নমনীয়তা দেখালে তারাও নমনীয়তা দেখাবে ৷
﴿وَلَا تُطِعْ كُلَّ حَلَّافٍ مَّهِينٍ﴾
১০) তুমি অবদমিত হয়ো না তার দ্বারা যে কথায় কথায় শপথ করে, যে মর্যাদাহীন,
﴿هَمَّازٍ مَّشَّاءٍ بِنَمِيمٍ﴾
১১) যে গীবত করে, চোগল খোরী করে বেড়ায়,
﴿مَّنَّاعٍ لِّلْخَيْرِ مُعْتَدٍ أَثِيمٍ﴾
১২) কল্যাণের কাজে বাধা দেয়, জুলুম ও বাড়াবাড়িতে সীমালংঘন করে,
﴿عُتُلٍّ بَعْدَ ذَٰلِكَ زَنِيمٍ﴾
১৩) চরম পাপিষ্ঠ ঝগড়াটে ও হিংস্র এবং সর্বোপরি বজ্জাত ৷
﴿أَن كَانَ ذَا مَالٍ وَبَنِينَ﴾
১৪) কারণ সে সম্পদশালী ও অনেক সন্তানের পিতা
﴿إِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِ آيَاتُنَا قَالَ أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ﴾
১৫) তাকে যখন আমার আয়াতসমূহ শোনানো হয় তখন সে বলে এ তো প্রাচীনকালের কিস্সা-কাহিনী৷
﴿سَنَسِمُهُ عَلَى الْخُرْطُومِ﴾
১৬) শিগগীরই আমি তার শুঁড় দাগিয়ে দেবো ৷
﴿إِنَّا بَلَوْنَاهُمْ كَمَا بَلَوْنَا أَصْحَابَ الْجَنَّةِ إِذْ أَقْسَمُوا لَيَصْرِمُنَّهَا مُصْبِحِينَ﴾
১৭) আমি এদের (মক্কাবাসী)-কে পরীক্ষায় ফেলেছি যেভাবে পরীক্ষায় ফেলেছিলাম বাগানের মালিকদেরকে, যখন তারা শপথ করেছিল যে, তারা খুব ভোরে গিয়ে অবশ্যি নিজেদের বাগানের ফল আহরণ করবে৷
﴿وَلَا يَسْتَثْنُونَ﴾
১৮) তারা এ ব্যাপারে কোন ব্যতিক্রমের সম্ভবনা স্বীকার করেছিলো না ৷
﴿فَطَافَ عَلَيْهَا طَائِفٌ مِّن رَّبِّكَ وَهُمْ نَائِمُونَ﴾
১৯) অতপর তোমার রবের পক্ষ থেকে একটি বিপর্যয় এসে সে বাগানে চড়াও হলো৷তখন তারা ছিলো নিদ্রিত৷
﴿فَأَصْبَحَتْ كَالصَّرِيمِ﴾
২০) বাগানের অবস্থা হয়ে গেলো কর্তিত ফসলের ন্যায়৷
﴿فَتَنَادَوْا مُصْبِحِينَ﴾
২১) ভোরে তারা একে অপরকে ডেকে বললোঃ
﴿أَنِ اغْدُوا عَلَىٰ حَرْثِكُمْ إِن كُنتُمْ صَارِمِينَ﴾
২২) তোমরা যদি ফল আহরণ করতে চাও তাহলে সকাল সকাল ফসলের মাঠের দিকে বেরিয়ে পড়ো ৷
﴿فَانطَلَقُوا وَهُمْ يَتَخَافَتُونَ﴾
২৩) সুতরাং তারা বেরিয়ে পড়লো৷ তারা নীচু গলায় একে অপরকে বলছিলো,
﴿أَن لَّا يَدْخُلَنَّهَا الْيَوْمَ عَلَيْكُم مِّسْكِينٌ﴾
২৪) আজ যেন কোন অভাবী লোক বাগানে তোমাদের কাছে না আসতে পারে৷
﴿وَغَدَوْا عَلَىٰ حَرْدٍ قَادِرِينَ﴾
২৫) তারা কিছুই না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে খুব ভোরে এমনভাবে দ্রুত সেখানে গেল যেন তারা (ফল আহরণ করতে)সক্ষম হয়৷
﴿فَلَمَّا رَأَوْهَا قَالُوا إِنَّا لَضَالُّونَ﴾
২৬) কিন্তু বাগানের অবস্থা দেখার পর বলে উঠলোঃ আমরা রাস্তা ভুলে গিয়েছি৷
﴿بَلْ نَحْنُ مَحْرُومُونَ﴾
২৭) তাও না- আমার বরং বঞ্চিত হয়েছি৷
﴿قَالَ أَوْسَطُهُمْ أَلَمْ أَقُل لَّكُمْ لَوْلَا تُسَبِّحُونَ﴾
২৮) তাদের মধ্যকার সবচেয়ে ভাল লোকটি বললোঃ আমি কি তোমাদের বলিনি তোমরা তাসবীহ করছো না কেন?
﴿قَالُوا سُبْحَانَ رَبِّنَا إِنَّا كُنَّا ظَالِمِينَ﴾
২৯) তখন তারা বলে উঠলোঃ আমাদের রব অতি পবিত্র৷ বাস্তবিকই আমরা গোনাহগার ছিলাম৷
﴿فَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَلَاوَمُونَ﴾
৩০) এরপর তারা সবাই একে অপরকে তিরষ্কার করতে লাগলো৷
﴿قَالُوا يَا وَيْلَنَا إِنَّا كُنَّا طَاغِينَ﴾
৩১) অবশেষে তারা বললোঃ “আমাদের এ অবস্থার জন্য আফসোস! আমরা তো বিদ্রোহী হয়ে গিয়েছিলাম৷
﴿عَسَىٰ رَبُّنَا أَن يُبْدِلَنَا خَيْرًا مِّنْهَا إِنَّا إِلَىٰ رَبِّنَا رَاغِبُونَ﴾
৩২) বিনিময়ে আমাদের রব হয়তো এর চেয়েও ভাল বাগান আমাদের দান করবেন৷ আমরা আমাদের রবের দিকে রুজু করছি
﴿كَذَٰلِكَ الْعَذَابُ ۖ وَلَعَذَابُ الْآخِرَةِ أَكْبَرُ ۚ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ﴾
৩৩) আযাব এরূপই হয়ে থাকে৷ আখেরাতের আযাব এর চেয়েও বড়৷ হায়! যদি তারা জানতো৷
﴿إِنَّ لِلْمُتَّقِينَ عِندَ رَبِّهِمْ جَنَّاتِ النَّعِيمِ﴾
৩৪) নিশ্চিতভাবে মুত্তাকীদের জন্য তাদের রবের কাছে রয়েছে নিয়ামত ভরা জান্নাত৷
﴿أَفَنَجْعَلُ الْمُسْلِمِينَ كَالْمُجْرِمِينَ﴾
৩৫) আমি কি অনুগতদের অবস্থা অপরাধীদের মতো করবো?
﴿مَا لَكُمْ كَيْفَ تَحْكُمُونَ﴾
৩৬) কি হয়েছে তোমাদের ? এ কেমন বিচার তোমরা করছো?
﴿أَمْ لَكُمْ كِتَابٌ فِيهِ تَدْرُسُونَ﴾
৩৭) তোমাদের কাছে কি কোন কিতাব আছে যাতে তোমরা পাঠ করে থাকো যে,
﴿إِنَّ لَكُمْ فِيهِ لَمَا تَخَيَّرُونَ﴾
৩৮) তোমাদের জন্য সেখানে তাই আছে যা তোমরা পছন্দ করো৷
﴿أَمْ لَكُمْ أَيْمَانٌ عَلَيْنَا بَالِغَةٌ إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ ۙ إِنَّ لَكُمْ لَمَا تَحْكُمُونَ﴾
৩৯) তোমাদের সাথে কি আমার কিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ এমন কোন চুক্তি আছে যে, তোমরা নিজের জন্য যা চাইবে সেখানে তাই পাবে?
﴿سَلْهُمْ أَيُّهُم بِذَٰلِكَ زَعِيمٌ﴾
৪০) তাদেরকে জিজ্ঞেস করে দেখো এ ব্যাপারে কে দায়িত্বশীল?
﴿أَمْ لَهُمْ شُرَكَاءُ فَلْيَأْتُوا بِشُرَكَائِهِمْ إِن كَانُوا صَادِقِينَ﴾
৪১) তাদেরকে জিজ্ঞেস করে দেখো এ ব্যাপারে কে দায়িত্বশীল? হয়ে থাকে ৷
﴿يَوْمَ يُكْشَفُ عَن سَاقٍ وَيُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ﴾
৪২) যেদিন কঠিন সময় এসে পড়বে এবং সিজদা করার জন্য লোকদেরকে ডাকা হবে৷ কিন্তু তারা সিজদা করতে সক্ষম হবে না৷
﴿خَاشِعَةً أَبْصَارُهُمْ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ ۖ وَقَدْ كَانُوا يُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ وَهُمْ سَالِمُونَ﴾
৪৩) তাদের দৃষ্টি হবে অবনত ৷ হীনতা ও অপমানবোধ তাদেরকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে৷ এর আগে যখন তারা সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলো তখন সিজাদার জন্য তাদেরকে ডাকা হতো (কিন্তু তারা অস্বীকৃতি জানাতো)৷
﴿فَذَرْنِي وَمَن يُكَذِّبُ بِهَٰذَا الْحَدِيثِ ۖ سَنَسْتَدْرِجُهُم مِّنْ حَيْثُ لَا يَعْلَمُونَ﴾
৪৪) তাই হে নবী! এ বাণী অস্বীকারকারীদের ব্যাপারে আমার ওপর ছেড়ে দাও৷ আমি ধীরে ধীরে এমনভাবে তাদেরকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবো যে, তারা বুঝতেই পারবে না৷
﴿وَأُمْلِي لَهُمْ ۚ إِنَّ كَيْدِي مَتِينٌ﴾
৪৫) আমি ধীরে ধীরে এমনভাবে তাদেরকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবো যে, তারা বুঝতেই পারবে না৷ অত্যন্ত মজবুত৷
﴿أَمْ تَسْأَلُهُمْ أَجْرًا فَهُم مِّن مَّغْرَمٍ مُّثْقَلُونَ﴾
৪৬) তুমি কি এদের কাছে কোন পারিশ্রমিক দাবী করছো যে, সে জরিমানার বোঝা তাদের কাছে দুর্বহ হয়ে পড়েছে?
﴿أَمْ عِندَهُمُ الْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ﴾
৪৭) তাদের কি গায়েবের বিষয় জানা আছে, যা তারা লিখে রাখছে?
﴿فَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ وَلَا تَكُن كَصَاحِبِ الْحُوتِ إِذْ نَادَىٰ وَهُوَ مَكْظُومٌ﴾
৪৮) অতএব তোমার রবের চূড়ান্ত ফায়সালা পর্যন্ত ধের্যসহ অপেক্ষা করো৷ এবং মাছওয়ার (ইউনুস আলাইহিস সালাম)মতো হয়ো না, যখন সে বিষাদ ভরাক্রান্ত হয়ে ডেকেছিলো৷
﴿لَّوْلَا أَن تَدَارَكَهُ نِعْمَةٌ مِّن رَّبِّهِ لَنُبِذَ بِالْعَرَاءِ وَهُوَ مَذْمُومٌ﴾
৪৯) তার রবের অনুগ্রহ যদি তার সহায়ক না হতো তাহলে সে অপমানিত হয়ে খোলা প্রান্তরে নিক্ষিপ্ত হতো৷
﴿فَاجْتَبَاهُ رَبُّهُ فَجَعَلَهُ مِنَ الصَّالِحِينَ﴾
৫০) অবশেষে তার রব তাকে বেছে নিলেন এবং নেক বান্দাদের অন্তরভুক্ত করলেন৷
﴿وَإِن يَكَادُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَيُزْلِقُونَكَ بِأَبْصَارِهِمْ لَمَّا سَمِعُوا الذِّكْرَ وَيَقُولُونَ إِنَّهُ لَمَجْنُونٌ﴾
৫১) এ কাফেররা যখন উপদেশবাণী (কুরআন) শোনে তখন এমনভাবে তোমার দিকে তাকায় যেন তোমার পদযুগল উৎপাটিত করে ফেলবে আর বলে যে, এ তো অবশ্যি পাগল৷
﴿وَمَا هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَالَمِينَ﴾
৫২) অথচ তা সারা বিশ্ব-জাহানের জন্য উপদেশ ছাড়া আর কিছুই নয়৷