দোয়া কুনুত বিতরের নামাযে পড়তে হয়ঃ
দোয়া কুনুত আরবীঃ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
اَللَّمُمَّ اِنَّ نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ
দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাঈ’নুকা, ওয়া নাস্তাগ্ফিরুকা, ওয়া নু’’মিনু বিকা, ওয়া নাতাওয়াক্কালু ‘আলাইকা, ওয়া নুছনী আলাইকাল খাইর। ওয়া নাশ কুরুকা, ওয়ালা নাকফুরুকা, ওয়া নাখলাউ’, ওয়া নাতরুকু মাঁই ইয়াফজুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া লাকানুসল্লী, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাস’আ, – ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা – আযাবাকা, ইন্না আযাবাকা বিল কুফ্ফারি মুলহিক্ব।
দোয়া কুনুতের অর্থ:
হে আল্লাহ! আমরা তোমারই সাহায্য চাই। তোমারই নিকট ক্ষমা চাই, তোমারই প্রতি ঈমান রাখি, তোমারই ওপর ভরসা করি এবং সকল মঙ্গল তোমারই দিকে ন্যস্ত করি। আমরা তোমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলি, অকৃতজ্ঞ হই না। হে আল্লাহ! আমরা তোমারই দাসত্ব করি, তোমারই জন্য নামায পড়ি এবং তোমাকেই সিজদাহ করি। আমরা তোমারই দিকে দৌড়াই ও এগিয়ে চলি। আমরা তোমারই রহমত আশা করি এবং তোমার আযাবকে ভয় করি। আর তোমার আযাবতো কাফেরদের জন্যই র্নিধারিত।
বিতরের নামাযে দোয়া কুনূত না পারলে কী করণীয়?
জিজ্ঞাসা:আমি দোয়া কুনূত মুখস্থ পারি না। এখন বিতরের তৃতীয় রাকাতে দুআ কুনূতের সময় আমি কী করব?
জবাব: বিতর নামাযে দুআয়ে কুনুত পড়া ওয়াজিব। এটি তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা ও সাথে সূরা মিলিয়ে তাকবীর বলে হাত বেঁধে পড়তে হয়।
সুতরাং আপনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দুআ কুনূত মুখস্থ করে নিন। আর দুআ কুনূত মুখস্থ করার আগ পর্যন্ত নিম্নোক্ত দুআটি পড়তে পারেন-
رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا حَسَنَةً وَّ فِی الْاٰخِرَةِ حَسَنَةً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ
অথবা কয়েকবার أَللّهُمَّ اغْفِرْ لَنَا বা أَسْتَغْفِرُ اللهَ পড়বেন।
(ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৭০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৩৪৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৪২-৪৩; রদ্দুল মুহতার ২/৭)
ইমাম নববী বলেন, জেনে রাখুন, অগ্রগণ্য মাযহাব মতে, কুনূতের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো দুআ নেই। তাই যে কোনো দুআ পড়লে এর দ্বারা কুনূত (আদায়) হয়ে যাবে; এমনকি দুআসম্বলিত এক বা একাধিক কুরআনের আয়াত পড়লেও কুনূতের উদ্দেশ্য হাছিল হয়ে যাবে। তবে, হাদিসে যে দুআ এসেছে সেটা পড়া উত্তম। (ইমাম নববীর ‘আল-আযকার, পৃষ্ঠা-৫০)
দোয়ায়ে কুনুতের পরিবর্তে তিনবার সূরা ইখলাস পড়া যাবে কি?
বিতর নামাযে দোয়ায়ে কুনুত পড়া ওয়াজিব। দোয়ায়ে কুনুতের পরিবর্তে তিনবার সূরা ইখলাস পড়া গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ সূরা ইখলাস কুনুত বা দোয়া সম্বলিত সূরা নয়। কুনুতের উদ্দেশ্য হচ্ছে- দোয়া করা। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দোয়া ব্যতীত অন্য যে কোনো দোয়া পড়লেও ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে এবং নামায সহীহ হয়ে যাবে। অবশ্য হাদীসে বর্ণিত দোয়া যেমন ‘আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতায়িনুকা’ এটা পড়া সুন্নত। তাই হাদীসে বর্ণিত এ দোয়া কেউ না জানলে দ্রুত শিখে নিবে।
যে কোন দোয়া পড়লে এর দ্বারা কুনুত হয়ে যাবে; এমনকি দোয়া সম্বলিত এক বা একাধিক কুরআনের আয়াত পড়লেও কুনুতের উদ্দেশ্য হাছিল হয়ে যাবে। তবে, হাদিসে যে দোয়া এসেছে সেটা পড়া উত্তম। (ইমাম নববীর ‘আল-আযকার ৫০)
কেউ যদি এক্ষেত্রে কোনো দোয়াই না পড়ে তাহলে পুনরায় নামায আদায় করতে হবে। (আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৭০; আলবাহরুর রায়েক ২/৪২; রদ্দুল মুহতার ১/৪৬৮; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ১/২৮০)