বৃহস্পতিবার, এপ্রিল 18
Shadow

সূরা আল হুজুরাত (অর্থ, নামকরণ, শানে নুযূল, পটভূমি ও বিষয়বস্তু)

‘আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক’। লেখাটি শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথেঃ


নামকরণ

৪ আয়াতের ( ) বাক্যাংশ থেকে এ সূরার নাম গৃহীত হয়েছে । অর্থাৎ যে সূরার মধ্যে আল হুজরাত শব্দ আছে এটি সেই সূরা ।

নাযিল হওয়ার সময়-কাল

বিভিন্ন থেকে জানা যায় এবং সূরার বিষয়বস্তু থেকেও সমর্থন পাওয়া যায় যে, এ সূরা বিভিন্ন পরিবেশ ও ক্ষেত্রে নাযিল হওয়া হুকুম-আহকাম ও নির্দেশনাসমূহের সমষ্টি । বিষয়বস্তুর সাদৃশ্যের কারণে এগুলোকে এখানে একত্রিত করা হয়েছে । তা ছাড়া বিভিন্ন বর্ণনা থেকে একথাও জানা যায় যে, ঐ সব হুকুম -আহকামের বেশীর ভাগই মাদানী যুগের শেষ পর্যায়ে নাযিল হয়েছে । যেমনঃ ৪আয়াত সম্পর্কে তাফসীরকারদের বর্ণনা হচ্ছে আয়াতটি বনী তামীম গোত্রে সম্পর্কে নাযিল হয়েছিলো যার প্রতিনিধি দল এসে নবীর ( সা) পবিত্র স্ত্রীগণের হুজরা বা গৃহের বাইরে থেকে তাকে ডাকাডাকি শুরু করে দিয়েছিলো । সমস্ত সীরাত গ্রন্থে হিজরী ৯ম সনকে এ প্রতিনিধি দলের আগমনের সময় বলে বর্ণনা করা হয়েছে । অনুরূপ ৬ আয়াত সম্পর্কে বহু সংখ্যক হাদীসের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, তা ওয়ালী ইবনে উকবা সম্পর্কে নাযিল হয়েছিলো- রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাকে নবী মুস্তালিক গোত্র থেকে যাকাত আদায় করে আনতে পাঠিয়েছিলেন । একথা সবারই জানা যে, ওয়ালীদ ইবনে উকবা মক্কা বিজয়ের সময় মুসলমান হয়েছিলেন ।

আলোচ্য বিষয়

এ সূরার বিষয়বস্তু হচ্ছে মুসলমানদেরকে এমন আদব-কায়দা, শিষ্টাচার ও আচরণ শিক্ষা দেয়া যা তাদের ঈমানদারসূলভ স্বভাব চরিত্র ও ভাবমূর্তির উপযুক্ত ও মানানসই ।

আল্লাহ ও তাঁর রসূলের ব্যাপারে যেসব আদব-কায়দা, ও শিষ্টাচারের দিকে লক্ষ রাখতে হবে প্রথম পাঁচ আয়াতে তাদেরকে তা শিখিয়ে দেয়া হয়েছে ।

এরপর নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, প্রতিটি খবরই বিশ্বাস করা এবং সে অনুসারে কোন কর্মকাণ্ড করে বসা ঠিক নয়, যদি কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কওমের বিরুদ্ধে কোন খবর পাওয়া যায় তাহলে গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে খবর পাওয়ার মাধ্যম নির্ভরযোগ্য কি না । নির্ভরযোগ্য না হলে তার ভিত্তিতে কোন তৎপরতা চালানোর পূর্বে খবরটি সঠিক কি না তা যাঁচাই বাছাই করে নিতে হবে ।

এরপর বলা হয়েছে মুসলমানদের দুটি দল যদি কোন সময় পরস্পর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তবে সে ক্ষেত্রে অন্য মুসলমানদের কর্মনীতি কি হওয়া উচিত ।

তারপর মুসলমানদেরকে সেসব খারাপ জিনিস থেকে আত্মরক্ষার নির্দেশ দেয়া হয়েছে যা সমাজ জীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে এবং যার কারণে পারস্পরিক সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায় । একে অপরকে ঠাট্রা বিদ্রূপ করা, বদনাম ও উপহাস করা, খারাপ নামে আখ্যায়িত করা, খারাপ ধারণা পোষণ করা, অন্যে গোপনীয় বিষয় খোঁজাখুঁজি ও অনুসন্ধান করা, অসাক্ষাতে মানুষের বদনাম করা এগুলো এমনতিও গোনাহের কাজ এবং সমাজে বিপর্যয়ও সৃষ্টি করে । আল্লাহ তা’আলা এগুলোকে নাম ধরে ধরে হারাম ঘোষণা করেছেন ।

অতপর গোত্রীয় ও বংশগত বৈষম্যের ওপর আঘাত হানা হয়েছে যা সারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে থাকে । বিভিন্ন জাতি, গোত্র ও বংশের নিজ নিজ মর্যাদা নিয়ে গর্ব ও অহংকার করা, অন্যদেরকে নিজেদের চেয়ে নিম্নস্তরের মনে করা এবং নিজেদের বড়ত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যদের হেয় করা, -এসব এমন জঘন্য খাসলত যার কারণে পৃথিবী জুলুমে ভরে উঠেছে । আল্লাহ তা’আলা অত্যন্ত ছোট্ট একটি আয়াতে একথা বলে এসব অনাচারের মূলোৎপাটন করেছেন যে, “সমস্ত মানুষ এই মূল উৎস থেকে সৃষ্টি হয়েছে । তাদেকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভিক্ত করা হয়েছে পারস্পরিক পরিচয়ের জন্য, গর্ব ও অহংকার প্রকাশের জন্য নয় এবং একজন মানুষের ওপর আরেকজন মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব লাভের জন্য আর কোন বৈধ ভিত্তি নেই । “

সবশেষে মানুষকে বলা হয়েছে যে, ঈমানের মৌখিক দাবী প্রকৃত জিনিস নয়, বরং সরল মনে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে মানা, কার্যত অনুগত হয়ে থাকা এবং আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর পথে জান ও মাল কুরবানী করা । সত্যকার মু’মিন সে যে এ নীতি ও আচরণ গ্রহণ করে । কিন্তু যারা আন্তরিকভাবে মেনে নেয়া ছাড়াই শুধু মৌখিকভাবে ইসলামকে স্বীকার করে এবং তারপর এমন নীতি ও আচরণ অবলম্বন করে যেন ইসলাম গ্রহণ করে তারা কোন মহা উপকার সাধন করেছে, পৃথিবীতে তারা মুসলমান, হিসেবে গণ্য হতে পারে, সমাজে তাদের সাথে মুসলমানের মত আচরণও করা যেতে পারে, কিন্তু আল্লাহর কাছে তারা মুসলমান হিসেবে গণ্য হতে পারে না ।

 

﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُقَدِّمُوا بَيْنَ يَدَيِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ﴾

১) হে মু’মিনগণ! আল্লাহ ও তাঁর রসূলের চেয়ে অগ্রগামী হয়ো না৷ আল্লাহকে ভয় করো৷ আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও জানেন৷

﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ وَلَا تَجْهَرُوا لَهُ بِالْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ أَن تَحْبَطَ أَعْمَالُكُمْ وَأَنتُمْ لَا تَشْعُرُونَ﴾

২) হে মু’মিনগণ! নিজেদের আওয়ায রসূলের আওয়াযের চেয়ে উঁচু করো না এবং উচ্চস্বরে নবীর সাথে কথা বলো না, যেমন তোমরা নিজেরা পরস্পর বলে থাকো৷ এমন যেন না হয় যে, তোমাদের অজান্তেই তোমাদের সব কাজ-কর্ম ধ্বংস হয়ে যায়৷

﴿إِنَّ الَّذِينَ يَغُضُّونَ أَصْوَاتَهُمْ عِندَ رَسُولِ اللَّهِ أُولَٰئِكَ الَّذِينَ امْتَحَنَ اللَّهُ قُلُوبَهُمْ لِلتَّقْوَىٰ ۚ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ عَظِيمٌ﴾

৩) যারা আল্লাহর রসূলের সামনে তাদের কণ্ঠ নিচু রাখে তারাই সেসব লোক, আল্লাহ যাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য বাছাই করে নিয়েছেন৷ তাদের রয়েছে ক্ষমা ও বড় পুরস্কার৷

﴿إِنَّ الَّذِينَ يُنَادُونَكَ مِن وَرَاءِ الْحُجُرَاتِ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ﴾

৪) হে নবী! যারা তোমাকে গৃহের বাইরে থেকে ডাকাডাকি করতে থাকে তাদের অধিকাংশই নির্বোধ৷

﴿وَلَوْ أَنَّهُمْ صَبَرُوا حَتَّىٰ تَخْرُجَ إِلَيْهِمْ لَكَانَ خَيْرًا لَّهُمْ ۚ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾

৫) যদি তারা তোমার বেরিয়ে আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করতো তাহলে তাদের জন্য ভাল হোত৷ আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু৷

﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَن تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَىٰ مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ﴾

৬) হে ঈমান গ্রহণকারীগণ, যদি কোন ফাসেক তোমাদের কাছে কোন খবর নিয়ে আসে তাহলে তা অনুসন্ধান করে দেখ৷ এমন যেন না হয় যে, না জেনে শুনেই তোমরা কোন গোষ্ঠীর ক্ষতি করে বসবে এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে৷

﴿وَاعْلَمُوا أَنَّ فِيكُمْ رَسُولَ اللَّهِ ۚ لَوْ يُطِيعُكُمْ فِي كَثِيرٍ مِّنَ الْأَمْرِ لَعَنِتُّمْ وَلَٰكِنَّ اللَّهَ حَبَّبَ إِلَيْكُمُ الْإِيمَانَ وَزَيَّنَهُ فِي قُلُوبِكُمْ وَكَرَّهَ إِلَيْكُمُ الْكُفْرَ وَالْفُسُوقَ وَالْعِصْيَانَ ۚ أُولَٰئِكَ هُمُ الرَّاشِدُونَ﴾

৭) ভাল করে জেনে নাও, আল্লাহর রসূল তোমাদের মাঝে বর্তমান৷ তিনি যদি বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই তোমাদের কথা মেনে নেন তাহলে তোমরা নিজেরাই অনেক সমস্যার মধ্যে পড়ে যাবে৷ কিন্তু আল্লাহ তোমাদের মধ্যে ঈমানের প্রতি ভালবাসা সৃষ্টি করে দিয়েছেন এবং তা তোমাদের কাছে পছন্দনীয় করে দিয়েছেন৷ আর কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে তোমাদের কাছে ঘৃণিত করে দিয়েছেন৷

﴿فَضْلًا مِّنَ اللَّهِ وَنِعْمَةً ۚ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ﴾

৮) আল্লাহর দয়া ও মেহেরবাণীতে এসব লোকই সৎপথের অনুগামী৷ আল্লাহ জ্ঞানী ও কুশলী৷

﴿وَإِن طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا ۖ فَإِن بَغَتْ إِحْدَاهُمَا عَلَى الْأُخْرَىٰ فَقَاتِلُوا الَّتِي تَبْغِي حَتَّىٰ تَفِيءَ إِلَىٰ أَمْرِ اللَّهِ ۚ فَإِن فَاءَتْ فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا بِالْعَدْلِ وَأَقْسِطُوا ۖ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ﴾

৯) ঈমানদারদের মধ্যকার দু’টি দল যদি পরস্পর লড়াইয়ে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও৷ তারপরও যদি দু’টি দলের কোন একটি অপরটির বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করে তবে যে দল বাড়াবাড়ি করে তার বিরুদ্ধে লড়াই করো৷ যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে৷ এরপর যদি তারা ফিরে আসে তাহলে তাদের মাঝে ন্যায় বিচারের সাথে মীমাংসা করিয়ে দাও এবং ইনসাফ করো৷ আল্লাহ ইনসাফকারীদের পছন্দ করেন৷

﴿إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ﴾

১০) মু’মিনরা তো পরস্পর ভাই ভাই ৷ অতএব তোমাদের ভাইদের মধ্যকার সম্পর্ক ঠিক করে দাও৷ আল্লাহকে ভয় করো, আশা করা যায় তোমাদের প্রতি মেহেরবানী করা হবে৷

﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِّن قَوْمٍ عَسَىٰ أَن يَكُونُوا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِّن نِّسَاءٍ عَسَىٰ أَن يَكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ ۖ وَلَا تَلْمِزُوا أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ ۖ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ ۚ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ﴾

১১) হে ঈমানদারগণ, পুরুষরা যেন অন্য পুরুষদের বিদ্রূপ না করে৷ হতে পারে তারাই এদের চেয়ে উত্তম৷ আর মহিলারাও যেন অন্য মহিলাদের বিদ্রূপ না করে৷ হতে পারে তারাই এদের চেয়ে উত্তম৷ তোমরা একে অপরকে বিদ্রূপ করো না৷ এবং পরস্পরকে খারাপ নামে ডেকো না৷ ঈমান গ্রহণের পর গোনাহর কাজে প্রসিদ্ধ লাভ করা অত্যন্ত জঘন্য ব্যাপার৷ যারা এ আচরণ পরিত্যাগ করেনি তারাই জালেম৷

﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ﴾

১২) হে ঈমানদাগণ, বেশী ধারণা ও অনুমান করা থেকে বিরত থাকো কারণ কোন কোন ধারণা ও অনুমান গোনাহ৷ দোষ অন্বেষন করো না৷ আর তোমাদের কেউ যেন কারো গীবত না করে৷ এমন কেউ কি তোমাদের মধ্যে আছে, যে তার নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করবে ?  দেখো, তা খেতে তোমাদের ঘৃণা হয়৷ আল্লাহকে ভয় করো৷ আল্লাহ অধিক পরিমাণে তাওবা কবুলকারী এবং দয়ালু৷

﴿يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَىٰ وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا ۚ إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ﴾

১৩) হে মানব জাতি, আমি তোমাদেরকে একজন পুরুষ এবং একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি৷ তারপর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীতে বিভক্ত করে দিয়েছি যাতে তোমরা পরস্পরকে চিনতে পার৷ তোমাদের মধ্যে যে অধিক পরহেজগার সে-ই প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে অধিক মর্যাদার অধিকারী৷ নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও সবকিছু সম্পর্কে অবহিত৷

﴿قَالَتِ الْأَعْرَابُ آمَنَّا ۖ قُل لَّمْ تُؤْمِنُوا وَلَٰكِن قُولُوا أَسْلَمْنَا وَلَمَّا يَدْخُلِ الْإِيمَانُ فِي قُلُوبِكُمْ ۖ وَإِن تُطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَا يَلِتْكُم مِّنْ أَعْمَالِكُمْ شَيْئًا ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾

১৪) এ বেদুইনরা বলে, “আমরা ঈমান এনেছি” তাদের বলে দাও তোমরা ঈমান আন নাই৷ বরং বল, আমরা অনুগত হয়েছি৷ ঈমান এখনো তোমাদের মনে প্রবেশ করেনি৷ তোমরা যদি আল্লাহ ও তাঁর আনুগত্যের পথ অনুসরণ করো তাহলে তিনি তোমাদের কার্যাবলীর পরস্পর দানে কোন কার্পণ্য করবেন না৷ নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু৷

﴿إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۚ أُولَٰئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ﴾

১৫) প্রকৃত ঈমানদার তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের ওপর ঈমান এনেছে এবং এ ব্যাপারে পরে আর কোন সন্দেহ পোষণ করেনি৷ তারপর প্রাণ ও অর্থ-সম্পদ দিয়ে জিহাদ করেছে৷ তারাই সত্যবাদী৷

﴿قُلْ أَتُعَلِّمُونَ اللَّهَ بِدِينِكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۚ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ﴾

১৬) হে নবী! ঈমানের এ দাবীদারদের বলো, তোমরা কি আল্লাহকে তোমাদের দীনের কথা অবগত করাচ্ছো ? আল্লাহ তো আসমান ও যমীনের প্রত্যেকটি জিনিস ভালভাবে অবহিত৷

﴿يَمُنُّونَ عَلَيْكَ أَنْ أَسْلَمُوا ۖ قُل لَّا تَمُنُّوا عَلَيَّ إِسْلَامَكُم ۖ بَلِ اللَّهُ يَمُنُّ عَلَيْكُمْ أَنْ هَدَاكُمْ لِلْإِيمَانِ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ﴾

১৭) এসব লোক তোমাকে বুঝাতে চায় যে, তারা ইসলাম গ্রহণ করে তোমার উপকার করেছে৷ তাদের বলো, ইসলাম গ্রহণ করে আমার উপকার করেছো একথা মনে করো না৷ বরং যদি তোমরা নিজেদের ঈমানের দাবীতে সত্যবাদী হয়ে থাকো তাহলে আল্লাহ তা’আলাই তোমাদের উপকার করে চলেছেন৷ কারণ তিনি তোমাদেরকে ঈমানের পথ দেখিয়েছেন৷

﴿إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ غَيْبَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ وَاللَّهُ بَصِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ﴾

১৮) আল্লাহ আসমান ও যমীনের প্রতিটি গোপনীয় বিষয় সম্পর্কে জানেন৷ তোমরা যা কিছু করছো তা সবই তিনি দেখছেন৷

 



‘আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক’। লেখাটি শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথেঃ

মন্তব্য করুন

Verified by MonsterInsights